শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ১০:১৪ অপরাহ্ন
আওয়ামী লীগ যতক্ষণ পর্যন্ত গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড এবং প্রকাশ্য দুর্নীতির জন্য ক্ষমা না চাইবে এবং তাদের অন্যায়কারী নেতাকর্মীরা বিচার ব্যবস্থার কাছে আত্মসমর্পণ করে অপরাধের জন্য বিচার শুরু না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ করার অনুমতি দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা শফিকুল আলম।
নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে দেয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “গত আগস্টে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো নায্য বিক্ষোভ বন্ধ বা নিষিদ্ধ করেনি। আমরা সমাবেশ করার স্বাধীনতা এবং সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি।” তিনি আরও জানান, গত সাড়ে পাঁচ মাসে ঢাকায় ১৩৬টি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি বিক্ষোভের ফলে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে। তবে সরকার কখনোই বিক্ষোভ বা সমাবেশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেনি।
তিনি প্রশ্ন করেন, “আমাদের কি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে বিক্ষোভ করার সুযোগ দেয়া উচিত?” তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই-আগস্টের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে যে আওয়ামী লীগের কর্মীরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের হত্যায় অংশ নিয়েছিল, এবং তাদের পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শহীদ হয়েছেন অনেক তরুণ শিক্ষার্থী এবং নাবালক শিশুও। তিনি দাবি করেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় গণহত্যা, খুন ও তাণ্ডবের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ দায়ী।”
এছাড়া, নিউইয়র্ক-ভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা তার ১৬ বছরের একনায়কত্বের শাসনামলে সরাসরি হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসিনার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চলছে এবং হাসিনার সরকারের আমলে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ জোরপূর্বক গুম এবং তিন হাজারের বেশি মানুষ বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, “পৃথিবীর কোনো দেশ কি একদল খুনি এবং দুর্নীতিবাজ চক্রকে আবার ক্ষমতায় আসতে দেবে?” তিনি দৃঢ়ভাবে জানান, “বাংলাদেশের জনগণ এই খুনিদের কোনো প্রতিবাদ-সমাবেশ করার সুযোগ দিলে তার বিরুদ্ধে কঠিন জবাব দেবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে এবং সহিংসতার দিকে দেশকে ঠেলে দেয়ার কোনো প্রচেষ্টাকে আমরা সুযোগ দেব না।”
তিনি সতর্ক করেন, “আওয়ামী লীগের পতাকাতলে কেউ যদি অবৈধ বিক্ষোভ করার সাহস করে, তবে তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে।”