সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৮ অপরাহ্ন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের দুই ভাই ও এক বোনের চাকরি হয়েছে। শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ আবু সাঈদের ভাই রমজান আলীকে বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর রংপুর ব্যুরো অফিসের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী এবং আরেক ভাই আবু হোসেনকে টিভি চ্যানেল নিউজ-২৪ রংপুর ব্যুরো অফিসের জ্যেষ্ঠ নির্বাহীর পদে নিয়োগ দিয়েছে।
অতিরিক্ত, আবু সাঈদের ছোট বোন সুমি খাতুনকে চাকরি দিয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ৯ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী সুমির হাতে সেমিনার অ্যাটেনডেন্ট পদের নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রফেসর ড. মো. তাজুল ইসলামসহ শহীদ আবু সাঈদের দুই ভাই উপস্থিত ছিলেন।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পক্ষ থেকে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক মো. ইয়াসিন হোসেন পাভেল পীরগঞ্জের বাবনপুরে আবু সাঈদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ভাইদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন, মা মনোয়ারা বেগম, বোন সুমি এবং অন্যান্য স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
বসুন্ধরা গ্রুপের এই উদ্যোগে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন মকবুল হোসেন। তিনি কোম্পানির চেয়ারম্যানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “আমি আজ অনেক খুশি। আমার দুই ছেলেকে চাকরি দিয়েছে। আল্লাহ তাদের ভালো করুক। সাঈদকে হারানো কষ্টের, কিন্তু দুই ছেলের চাকরি হওয়ায় সাঈদের মা খুব খুশি।”
ইয়াসিন হোসেন পাভেল জানান, আন্দোলনের শুরু থেকেই বসুন্ধরা গ্রুপ ছাত্রদের সহযোগিতা করে আসছে। তিনি বলেন, “আমাদের চেয়ারম্যানের আকাঙ্ক্ষা ছিল শহীদ আবু সাঈদের পরিবারকে সহযোগিতা করব। আমরা তাদের সঙ্গে রংপুর এলাকার মানুষের জন্য কাজ করব।”
তিনি পরিবারের অন্য সদস্যদের খোঁজখবর নেন এবং যেকোনো সমস্যা সমাধানে পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। রমজান আলী ও আবু হোসেন তাদের চাকরি পাওয়ার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শহীদ আবু সাঈদের স্বজন মাহমুদুল হাসান বলেন, “আবু সাঈদ বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রথম বুক পেতে দিয়ে শহীদ হয়েছেন। তার আত্মদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ভালো কাজ করেছে।”
গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ, যিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন এবং প্রথম শহীদ হিসেবে পরিচিত। তার মৃত্যুর পর সারা দেশে আন্দোলন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যা ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিকে নিয়ে যায়।