শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ০৭:৫৬ পূর্বাহ্ন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনদের নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক আয়োজন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৈঠকটি শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টার কিছু আগে শেষ হয়। বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বৈঠকে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা।
বৈঠকে অংশ নেওয়া বিএনপির নেতারা গণঅভ্যুত্থানের প্রায় সাড়ে ৫ মাস পর রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিকভাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জানিয়েছে, ঘোষণাপত্রের খসড়ায় ইসলামী মৌলিক বিষয় বাদ পড়েছে এবং এমন একটি মূল্যবান দলিল তৈরিতে কোনো অস্থিরতা, অসংগতি বা সমন্বয়হীনতার প্রয়োজন নেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বৈঠক শেষে বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আমাদের রাজনৈতিক ঐক্যে যাতে ফাটল না ধরে, সেদিকে দৃষ্টি রাখার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।” তিনি গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ঘোষণাপত্রের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও বৈঠকে অংশ নেয় এবং তাদের পক্ষ থেকে সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র রচনার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে মতবিনিময়ের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল। আমরা আমাদের মতামত পেশ করেছি। সব রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐক্য ধারণ করার জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রণয়নের বিষয়ে একমত।”
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, “যদিও ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার জন্য দু’দিন আগে সরকারের পক্ষ থেকে যে খসড়া দেওয়া হয়েছিল, তা অনেকেই সময়মতো পায়নি। আমরা পরামর্শ দিয়েছি, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল তৈরিতে কোনো অস্থিরতা বা সমন্বয়হীনতা থাকা উচিত নয়। ধীরস্থিরভাবে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা উচিত।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “এই খসড়ায় ইসলামী মৌলিক বিষয়গুলো বাদ পড়েছে, যা ইতিহাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে ইসলামী শক্তি অনেক বড় শক্তি এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে তাদের অসাধারণ ত্যাগ রয়েছে। তাদের ইতিহাস, শহিদদের আত্মত্যাগ, গুম-ক্রসফায়ারের ঘটনা এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ঘোষণাপত্রের কাঠামোতে স্থান পায়নি। আমরা সরকারের কাছে এগুলো তুলে ধরেছি এবং পরামর্শ দিয়েছি যে, এ ধরনের মূল্যবান ঘোষণাপত্র তৈরিতে আরও মতবিনিময় হওয়া উচিত, যাতে সব দলের মতামত অন্তর্ভুক্ত হয়।”
বৈঠকে জামায়াতে ইসলামী থেকে উপস্থিত ছিলেন মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হাবিবুর রহমান আজাদ, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল এবং এহসানুল মাহবুব জুবায়ির।