শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ০৮:২৯ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
৪৩ বছর বয়সে আবারও দলের নেতৃত্বে ফিরবেন ধোনি এবার ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে ফ্রান্স আউট বিতর্ক নিয়ে ইমরুল কায়েসের বিস্ফোরক মন্তব্য মুহুতে ভাইরাল এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রতি বোর্ডে যে ১৪ নির্দেশনা দিল প্রকাশ্যে এলো নথি গাজায় হামলার জন্য ইসরাইলে রকেট ও বিস্ফোরক রপ্তানি করেছে ভারত ডুবন্ত টাইটানিক নিয়ে নতুন তথ্য প্রকাশ, জানলে আপনিও অবাক হবেন বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশের তালিকায় বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, আবহাওয়া অফিসের বিশেষ সতর্কবার্তা বড় জয়ে দিয়ে বিশ্বকাপ এর প্রস্তুতি সারল বাংলাদেশ তাসকিনকে বাদ দিয়ে একাধিক নতুন মুখ নিয়ে দল ঘোষণা করলো বাংলাদেশ

জাদরানের ১৭৭ রানের অতিমানবীয় ইনিংসে ভেঙ্গে চুরমার সব রেকর্ড

আহমেদ তুহিন / ৪৮ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ০৮:২৯ অপরাহ্ন

আফগানিস্তান যখন ৩৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে, তখন ইংল্যান্ড মনে করেছিল যে ‘অনভিজ্ঞ’ আফগানদের ৫০ ওভার খেলা কঠিন হবে। তবে অবাক করা ফল হল, ৫০তম ওভার শেষে তারা দাঁড়িয়ে ছিল ৩২৫ রানের বিশাল পাহাড় নিয়ে। এর পেছনে সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ইবরাহিম জাদরানের। তার রেকর্ডগড়া ইনিংসই আফগানিস্তানকে এই বিপুল স্কোর উপহার দিয়েছে।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বি গ্রুপে গতকাল অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর লড়াই জমে ওঠে। ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তান দু’দলই একটি করে ম্যাচ হারার পর এই ম্যাচটি হয়ে ওঠে টিকে থাকার লড়াই।

হারলেই বিদায়, এমন সমীকরণ নিয়ে আফগানিস্তান টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না। জফরা আর্চারের বিধ্বংসী বোলিংয়ে তারা মাত্র ১৫ রানে দুই ব্যাটার হারিয়ে ফেলে। পাওয়ারপ্লের শেষেও তারা চাপে ছিল, ৩৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে।

এখনই শুরু হয় ইবরাহিমের বীরত্ব। ওপেন করতে নেমে তিনি তার তিন সঙ্গীকে সাজঘরে ফিরে যেতে দেখেন, কিন্তু ধৈর্য্য হারাননি। চতুর্থ উইকেটে হাশমতউল্লাহ শহিদির সঙ্গে ১০৩ রানের একটি বড় জুটি গড়ে দেন। শহিদির বিদায়ের পরও দলের সূতা ছেড়ে যাননি। ৩০ থেকে ৪০ ওভারের মধ্যে আফগানরা ৬৯ রান তোলে, যেখানে বড় অবদান ছিল আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের। তার ৩১ বলে ৪১ রানের ইনিংসটি আফগানদের বড় রান গড়ার পথ প্রশস্ত করে।

ওমরজাইয়ের বিদায়ের পর, শেষ ১০ ওভারে আফগানরা ১১৩ রান তোলে, যেখানে মোহাম্মদ নবী ২৪ বলে ৪০ রান করে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তবে, ইবরাহিমের ইনিংসই ছিল একদম আলাদা।

ইবরাহিম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৩৭তম ওভারে, ১০৬ বল খেলে। এরপর সেঞ্চুরির পর থেকে আরও ৪০ বল খেলে তিনি ৭৭ রান তুলে নেন। পুরো ইনিংসে ইবরাহিম তার স্কিল, ম্যাচ পড়ার ক্ষমতা এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী ভূমিকা পাল্টানোর দক্ষতা দেখিয়েছেন, যা তাকে বড় ইনিংস গড়তে সাহায্য করেছে।

এমন এক ইনিংস তাকে রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে দিয়েছে। এটি আফগানিস্তানের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সেঞ্চুরি। তবে সবচেয়ে বড় কথা, ইবরাহিম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির রেকর্ডও ভেঙে ফেলেছেন। বেন ডাকেট মাত্র এক সপ্তাহ আগে ১৬৫ রান করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সবচেয়ে বড় ইনিংস খেলার রেকর্ড গড়েছিলেন। ইবরাহিম আজ ডাকেটের রেকর্ড ভেঙে ১৭৭ রানের ইনিংস খেলে তাকে দুই নম্বরে ঠেলে দিয়েছেন। ধারাভাষ্যকার নাসের হুসেইন পর্যন্ত বললেন, এটি তার দেখা অন্যতম সেরা ইনিংস।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের আশায় আফগানরা দুই ম্যাচের পর হতাশায় ছিল, কিন্তু এখন তারা ২০২৩ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানোর সুখস্মৃতি পুনরাবৃত্তির স্বপ্ন দেখছে। যদি তা ঘটে, তবে তাদের ইতিহাসে আরও একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত হবে – চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথম জয়। যেখানে বাংলাদেশ তা পেতে সময় নিয়েছিল ৪টি আসর, আফগানরা সেই জয় পেতে পারে তাদের দ্বিতীয় ম্যাচেই।

এক ঘণ্টার ব্যবধানে আফগানিস্তানের মনের ভাব বদলে গেছে, আর এর পেছনে যিনি ছিলেন, তিনি হলেন ইবরাহিম। এমন বীরত্ব ছাড়া কী আর বলা যায়!


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *