মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৭ পূর্বাহ্ন
জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শত শত মানুষ নিহত হন, আহত হন অসংখ্য। পরিস্থিতি ক্রমশ গুরুতর হয়ে উঠলে, আন্দোলনের চাপে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট দ্রুত পাল্টে যায়।
গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী, প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডের জন্য অভিযুক্তদের বিচার দাবিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগও আনা হয়। অনেকেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেন।
এই পরিস্থিতিতে, ‘সারডা সোসাইটি’ নামের একটি সংগঠনের পক্ষে নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া ১৯ আগস্ট আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য একটি রিট দায়ের করেন।
তবে, ১ সেপ্টেম্বর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের নেতৃত্বে হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি খারিজ করে দেয়।
অন্যদিকে, ২৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন নিয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। সভায় আইন মন্ত্রণালয় থেকে গণহত্যা, গুম, খুন ও যৌন নির্যাতনের মতো অপরাধকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য করে, এসব অপরাধে জড়িত রাজনৈতিক দলকে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার ৮টি সংশোধনী প্রস্তাব আনা হয়।
গতকাল তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, সাংবাদিক খালিদ মহিউদ্দীনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আওয়ামী লীগ ফ্যাসিজম এবং গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। তাদের বিচার এখনো চলছে এবং দল হিসেবে তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।”
আওয়ামী লীগ কীভাবে নিষিদ্ধ হতে পারে, সে প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, “এ ধরনের সিদ্ধান্ত জাতীয় পর্যায়ে নেওয়া হবে, যেখানে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গুরুত্ব পাবে। সকল রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য হলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হবে।”
তবে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, “আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ করা সমীচীন হবে না।”